জেন আয়ার উপন্যাসটি রচনা করেন ইংরেজি লেখক Charlotte Bronte - শার্লট ব্রন্টি, যা 1847 সালের 16 October "কারের বেল - Currer Bell" নামে প্রকাশিত হয়। এটা হচ্ছে একটি Autobiography বা জীবনবৃত্তান্ত। Charlotte Bronte কে "the first historian of the private consciousness" এবং Proust and Joyce লেখকদের মতো "সাহিত্যিক পূর্বপুরুষ - the literary ancestor of writers" বলা হয়। গবেষকগণের মতে, ঔপন্যাসিক Charlotte Bronte - শার্ল্ট ব্রন্টির ব্যাক্তিগত জীবনের সাথে জেন আয়ারের জীবন যাত্রার বহুলাংশে মিল লক্ষ করা যায়। উপন্যাস পাঠে মনে হয় শার্ল্ট ব্রন্টি যেন জেনের মধ্য দিয়ে তাঁর নিজেরই জীবন কাহিনী বর্ণনা করছেন।
Jane Eyre Summary in Bangla - Bangla Summary - characters |
Jane Eyre Summary in Bangla
উপন্যাসের শুরুতে আমরা দেখতে পাই, জেন আয়ার একজন ১০ বছর বয়সী অনাথ শিশু, যে Gateshead [গেটসহেড] এ তার মামী মিসেস সারাহ রীড [ Mrs. Sarah Reed] এর বাসায় থাকতো। তার মামী ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর একজন মহিলা আর জেন আয়ার ছিল তার দু’চোখের বিষ।মিসেস রীডের দুই মেয়ে জর্জিনা রীড [Georgiana Reed] ও এলিজা রীড [Eliza Reed] আর এক ছেলে জন রীড [John Reed]। মায়ের মত তারাও Jane -কে ঘৃণা করত। এক্ষেত্রে John যেন সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সে সারাদিন সুযোগ খুজতো কিভাবে জেনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও আঘাত করে তার জীবনটা বিষিয়ে তোলা যায়।এই বাড়িতে দয়া যদি কারো কাছ থেকে পেয়ে থাকে সে হল তাদের বাড়ির পরিচারিকা মিস বেসি লী [Miss bessie Lee]
একদা একদিন জন পর্দার আড়ালে লুকিয়ে বই পড়তে দেখে জেনকে এতিম বলে খোটা দেয়।এটাও বলে যে তার বাবা তার জন্যে দুটো পয়সাও রেখে যায়নি। যদি সে তাদের বাসায় না থাকতো তাহলে তাকে (জেনকে) রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে খেতে হত। শেষে তার হাত থেকে বইটা কেড়ে নিয়ে তার মাথায় ছুঁড়ে মারে। ফলে তার কপাল কেটে রক্ত বের হয়। রাগের মাথায় জেন তাকে আচড়ে দেয়। মিস রীড তাকে শাস্তি হিসেবে উপর তলার লাল ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে, যেখানে তার মামা মি রীড [Mr. Reed] মারা গিয়েছিলেন। জেন এর মনে এই বিশ্বাস ছিল যে, তাঁর মামার আত্মা এই ঘরে ঘুরে বেড়ায়।ফলে রাতে সে প্রচণ্ড ভয় পায় ও অজ্ঞান হয়ে যায়। যখন জ্ঞান ফিরে আসে তখন সে তার পাশে দয়ালু ডাক্তার মি লয়েড [Mr. Lloyd] ও মিস বেসি লী বসে আছেন। জেন এর মামী ও তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ায় জনাব লয়েড, জেন এর সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার সুযোগ পান। জেন এর মুখে সব কিছু শুনে তিনি মিসেস রীডকে পরামর্শ দেন যে, জেন এর আসলে গেটশেড ভালো লাগছে না। তাই তাকে দূরের কোন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলে ভালো হয়।
তারপর জেনকে লোউড [Lowood] স্কুলে ভর্তি করানো হয়। এই স্কুলের পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক ছিলেন মি ব্রকলহার্স্ট [Mr. Brocklehurst] একজন নিষ্ঠুর, অভদ্রভাষী ও দ্বিমুখী চরিত্রের অধিকারী ব্যাক্তি। সে স্কুলের শিক্ষকদের বলতেন মেয়েদেরকে খাবার কম দিতে, যাতে তাঁরা পূর্বের ঈশ্বরভক্ত শহীদ ব্যক্তিদের মত কষ্টসহিঞ্চু হতে পারে। কিন্তু অনুদানের টাকায় তিনি ও তার পরিবার নিয়ে সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতেন। লোউড স্কুলে জেন দুইজন শুভাকাঙ্ক্ষী লাভ করে। একজন হল তার বন্ধু মিস হেলেন বার্নস [Miss Helen Burns]ও আর একজন তাদের শিক্ষিকা মিস মারিয়া টেম্পল [Miss Maria Temple]। লোউড স্কুলে ক্ষুধা, অনাহার, তীব্র শীতের কষ্ট থাকলেও মিসেস রীড ও তার ছেলের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে জেন এর জীবনে একটা স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। কিন্তু একসময় শীতের প্রকোপ আঘাত হানে লোউড স্কুলে। টাইফাস [Typhus] এর আক্রমনে তার প্রাণের বান্ধবী হেলেনসহ স্কুলের প্রায় জনা ত্রিশেক ছাত্রী মারা যায়।এতে এলাকার মানুষের টনক নড়ে। ধনী ব্যাক্তিরা বড় অঙ্কের অনুদান সংগ্রহ করে স্কুলের ব্যাবস্থাপনা ঢেলে সাজায়।
জেন এখানে প্রায় ৬ বছর শিক্ষার্থী হিসেবে থাকে। পরে আর দুই বছর এখানেই শিক্ষকতা করে। মিস টেম্পলের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় জেন এর এখানে আর মন বসে না। সে পত্রিকায় শিক্ষকতার চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়। প্রায় সপ্তাহ দুয়েক পরে থর্নফিল্ড [Thornfield] থেকে একটি চিঠি আসে। এডেল বার্নস [Adele Varens] নামে একটি ফরাসী বাচ্চা মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে হবে। অ্যাডেলের প্রাথমিক পরিচয় হল বাড়ির মালিক মি এডওয়ার্ড রচেস্টার [Mr. Edward Rochester] তাকে দত্তক নিয়েছেন। তবে আরেকটি কথা শোনা যায় যে, তার মা সেলিন [Celine Varnes] এর সাথে জনাব রচেস্টারের প্রেম ছিল। যখন রচেস্টার খেয়াল করে দেখেন যে, তার টাকার প্রতি সেলিনের লোভ রয়েছে এবং সে একজন অবিশ্বস্থ মহিলা, তখন সে অ্যাডেলকে নিয়ে চলে আসে। জেন থর্নফিল্ড গেলে সে স্থানটি তার মনে ধরে যায়। তার ছাত্রী এডেল বার্নস এবং বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মিস এলিস ফেয়ারফ্যাক্স [Miss Alice Fairfax] দুজনকেই তার খুব ভালো লাগে।
মাস তিনেক পরে জেন একদিন নদীর ধারে ঘুরতে গেলে তার সাথে মি এডওয়ার্ড রচেস্টার [Mr. Edward Rochester] দেখা হয়ে যায়। জেন মনে মনে তাকে ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু বলতে সাহস পায় না। একদিন রাতে জেন একটা চিৎকার শুনে বাহিরে বের হয়ে প্রথমে কিছু দেখতে পায় না। জনাব রচেস্টারের ঘরের পাশে গেলে দেখে যে, তার ঘরের ভিতরে আগুন লেগে রয়েছে। মরার মত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন জনাব রচেস্টারকে তিনি ডেকে তুলে আগুনের হাত থেকে রক্ষা করেন। রচেস্টার তাকে জানায় আগুনটা সম্ভবত গ্রেস পুল [Grace Poole] নামে একজন কাজের লোক লাগিয়েছে। কিন্তু গ্রেস পুল বাড়িতে তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেখে জেন বুঝতে পারল, সেদিন রাতে জনাব রচেস্টার ভিতরের পুরো কাহিনী তাকে জানায়নি। এরপর যখন জনাব রচেস্টার বাড়িতে ব্লানশে ইনগ্রাম [Blanche Ingram] নামে একজন অর্থলোভী মহিলাকে নিয়ে এলেন, তখন জেন হতাশায় ডুবে গেল।
একদিন রাতে জ্যামাইকা থেকে মি. রিচার্ড ম্যাসন [Richard Mason] নামে একজন লোক এলো। তার উপস্থিতিতে জনাব রচেস্টার বিরক্ত হলেন কিন্তু তার সাথে ঘরে দীর্ঘক্ষন আলাপের পরে একসময় খুশি মনেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। রাতের বেলা হঠাৎ চিৎকার শুনে বেরিয়ে এলো জেন। বাড়ির অন্যরা টের পায়নি। জনাব রচেস্টার জেনকে উপরের একটা ঘরে নিয়ে গেলে। যেখানে মি. ম্যাসন আহত অবস্থায় পড়েছিল। মি. রসচেস্টার তাকে বলল মি. ম্যাসন এর আঘাতপ্রাপ্ত শরীরে স্পঞ্জ ধরে রাখতে। তিনি দু ঘন্টার মাঝে ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসলেন। রাত পোহাবার আগেই তিনি মি. ম্যাসনকে ডাক্তারের বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। এখানেও জনাব রচেস্টার জেনকে খোলাসা করে কিছু বলেনি। কয়েকদিন পরে তাদের বাসায় মীসেস রীডের পরিচারিকা বেসীর স্বামী লীভেন আসে, ও তাকে জানায় মিসেস সারাহ রীড তাকে দেখতে চেয়েছেন। তিনি এখন শয্যাশায়ী। জেন তখন এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে গেটশেডের দিকে যাত্রা করে। মিসেস রীডের কাছে গেলে সে জানায় সে এখনো জেনকে ঘৃণা করে। আরো জানতে পারে জন রীড মদ আর জুয়ার মাধ্যমে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলেছে। শেষবার এসে তার মায়ের থেকে সমস্ত সম্পত্তি লিখিয়ে নিতে চেয়েছিল। এর কিছু দিন পরে লন্ডনে সে মারা গিয়েছে। ৫ম সপ্তাহে মিসেস রীড জেনকে ডাকলেন। তাকে জানালেন, তার এক চাচা আছে নাম জন আয়ার [John]। তার একটা চিঠি তাকে দিলেন। যেটা তিন বছর আগে মিসেস রীড পেয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন তার চাচাকে তিনি জানিয়েছেন, টাইফাস জ্বরে জেন এর মৃত্যু হয়েছে। সেদিনই তার মামী মৃত্যু বরন করে।
আরও পড়ুনঃ Iliad by Homer Bangla Summary with characters
জেন থর্নফিল্ডে ফিরে আসে। জনাব রচেস্টার তাকে তার ভালোবাসার কথা জানায়। জেনের বিশ্বাস হয় না। তখন তিনি বলেন আসলে জেন এর ভিতরে ঈর্শা জাগানোর জন্যেই মূলত ব্লানশে ইনগ্রামকে এ বাড়িতে আনা হয়েছিল। যেদিন জেনকে প্রথম দেখেছিলেন, সেদিনই তিনি তাকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন। জেনও তাকে তার ভালোবাসার কথা জানায়। ঠিক হয়ে পরের মাসেই তাদের বিয়ে। বিয়ের আসরে তাঁরা যখন শপথ নিবে, এসময় মি. রিচার্ড ম্যাসন ও আইনজীবী মি. ব্রিগস [Mr. Briggs] এসে চিৎকার করে বলে যে, জনাব রচেস্টারের একজন বউ আছে যার নাম [Bertha Mason] বার্থা ম্যাসন। মি. ম্যাসন দাবি করে যে, সে বার্থা ম্যাসন এর ভাই। শুনে মি. রচেস্টার তার দাবী অস্বীকার করে না। পরে তাদের সবাইকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেখায় যে, বার্থা আসলে পাগল। যে ঘরের ভিতরে পাগলামী করছিল, এদিক সেদিক পাগলের মত ছোটা-ছুটি করছিল।
পরে রচেস্টার তাকে জানায়, তরুণ বয়সে তার বাবা তাকে ধনী বানানোর জন্যে তাকে এক ধনকুবেরের মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন যদিও তিনি জানতেন মেয়েটা (বার্থা ম্যাসন) আসলে একটা পাগল। থর্নফিল্ডের চতুর্থ তলায় (third flore) রচেস্টার তাকে বন্দী করে রাখতেন এবং গ্রেস পুলকে তার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আসলে সেই রহস্যময় আগুন লাগার আসল কারন ছিল বার্থা।
কিছুদিন পরে মনের কষ্ট নিয়ে জেন প্রায় খালি পকেটে থর্নফিল্ড ছেড়ে বেড়িয়ে যায়। পকেটে ছিল মাত্র ২০ শিলিং। মার্শ এন্ড [Marsh end] এ পৌছালে তার পয়সা শেষ হয়ে যায়। ক্যারিজ থেকে নেমে খাবার ভিক্ষা করে কিন্তু তাকে কেউ ভিক্ষাও দেয় না। অবশেষে মুর হাউজে তার আশ্রয় হয়। জেন আয়ার নিজের নাম জেন ইলিয়ট বলে তাদের কাছে পরিচয় দেয়। সেখানে সে বাড়িতে মেরি রিভার্স [Marry Rivers], ডায়ানা [Diana Rivers] ও সেইন্ট জন রিভার্স [St. John Rivers] এর সাথে তার ভালো খাতির হয়ে যায়। জন রিভার্স ছিল একজন পাদ্রী। সে জেনকে মরটন - Morton এ একটি অবৈতনিক বিদ্যালয়ে চাকরি খুজে দেন। একদিন জন রিভার্স তাকে জিজ্ঞাসা করে লোউড স্কুলের জেন আয়ার নামে কাউকে সে চিনে কিনা। জেন আয়ারের চাচা জনাব জন আয়ার - John Eyre মৃত্যুর আগে তার জন্যে ২০০০০ পাউন্ড রেখে গিয়েছেন। জেন তখন নিজের আসল পরিচয় দেয়। তার জন্যে আরো বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। জন রিভার্সরা হল তার ফুপাতো ভাই ও বোন। জেন তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে তার তিন আত্মীয়কে ১৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে দেয়। এই অর্থ লাভ করার পর জন রিভার্স ভারতে একজন মিশনারী হিসেবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং জেনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু জেন তার প্রস্তাবে রাজী হয় না কারন সে এখনো মি. রচেস্টারকে ভালোবাসে।
সে আরো ভাবতে থাকে। এক রাতে তার কাছে মনে হল যেন মি. রচেস্টার তাকে ডাকছে। তড়িৎ সিদ্ধান্তে সে থর্নফিল্ডে যায় এবং সেখানে গিয়ে দেখে থর্নফিল্ড নামক বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মি. রচেস্টার এর পাগল স্ত্রী বার্থা ম্যাসন আগুন লাগিয়েছে এবং এর সাথে সে নিজেও পুড়ে মারা গেছে। রচেস্টার তার পরিচারিকা ও কাজের লোকদের বাচাতে পেরেছেন কিন্তু এর সাথে নিজের দৃষ্টিশক্তি ও এক হাতের কর্মশক্তি হারিয়েছেন। রচেস্টার তখন ফার্নাডিনে - Ferndean ছিলেন। জেন সেখানে যান এবং অন্ধ ও এক হাতের কর্মশক্তিহীন রচেস্টারকে বিয়ে করেন। জেন যখন এই অটোবায়োগ্রাফী লিখছিলেন, তখন তারা দুজনে একসাথে ১০ টি আনন্দময় বছর পার করেছেন। স্কুল থেকে এডেলকেও জেন বাসায় নিয়ে আসে। দুই বছরের মাথায় রচেস্টার তার এক চোখে কিছুটা আলো ফিরে পেয়েছেন ও তাদের সদ্যজাত সন্তানকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
Jane Eyre Characters:
Edward Rochester : উপন্যাসের প্রধান পুরুষ চরিত্র এবং নায়ক। রচেস্টার হলেন থর্নফিল্ড এবং প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক এবং জেন আইয়ারের প্রেমিক। উপন্যাসের শেষে রচেস্টার ও জেন আইয়ার বিয়ে করেন। জেন আয়ার তারই গৃহে তার এক পালিতা কন্যার গৃহ শিক্ষিকা নিযুক্ত হয়। জেনের সাথে প্রথম সাক্ষাতেই সে জেনের প্রেমে পড়ে যায়। দুর্বলতা সত্ত্বেও সে জেন আয়ারকে আকৃষ্ট করে। রচেস্টার ফরাসি ভাষা জানা একজন সুশিক্ষিত ব্যাক্তি। তিনি সামাজিক কোনাে রীতিনীতিকে প্রধান্য না দিয়ে নিজের বিচার বিবেচনার উপর বেশি নির্ভর করেন। কিছুটা অহঙ্কারী, হৃদয়বান এবং বদমেজাজী এবং আপাত দৃষ্টিতে তাকে কিছুটা নিষ্ঠুর প্রকৃতির মনে হলেও হৃদয়বান এবং প্রেমিক পুরুষ। তিনি বিবাহিত, তার স্ত্রী একজন উন্মাদ মহিলা। এই উন্মাদ স্ত্রীর প্রতি তিনি তার দায়িত্ব যথাযথ ভাবেই পালন করে গেছেন সর্বদা। এক্ষেত্রে তার গভীর মানবিকতা বােধের পরিচয় মেলে। জেন নানা প্রতিকুলতা সত্ত্বেও রচেষ্টারের ভালােবাসাকে উপেক্ষা করে। জেন শেষে এই রচেষ্টারের নিকটই নিজেকে সমর্পন করে।
John Reed : মিসেস সারাহ রিডের একমাত্র পুত্র। জন বরাবরই ছিল বদমেজাজী ও একগুঁয়ে প্রকৃতির। সে জেনকে দু’চোখে দেখতে পারত না। জেনের উপর মাঝে মধ্যেই সে বিনা কারণে নীপিড়ন চালাত। জেনকে মাঝে মধ্যেই মারধাের করা ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন মাফিক কর্ম। পরবর্তী পর্যায়ে সে খারাপ বন্ধু বান্ধবের সাথে মিশে একেবারেই উচ্ছন্নে যায়। বল্গাহীন জীবন যাপন করার কারণে সে অল্প বয়সেই মারা যায় , প্রতিবেশিরা ধারণা করত সে আত্তহত্যা করেছে।
Eliza Reed : মিসেস সারাহ রিডের কন্যা। জেনের কাজিন, সে জেনের সাথে নিষ্ঠুর আচরন করতো।
Georgiana Reed : মিসেস সারাহ রিডের দুই কন্যা। সে তার বোন Eliza Reed এর চেয়ে বেশি সুন্দরী । পরবর্তী পর্যায়ে মিসেস রীড যখন মারা যান তখন এই দু'বােন (এলিজা ও জর্জিনা) জেনকে কাছে পেয়ে স্বস্তি লাভ করে এবং তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক সহজ হয়ে আসে।
Bessie Lee : মিসেস রিডের পরিবারে প্রধান পরিচারিকা, এক কথা্য বলা যায় এ পরিবারে অন্যান্য যে সব পরিচারিকা আছে, তাদের প্রধান সে। বেসি লি গেটসহেডের চাকরানী, যিনি মাঝে মাঝে জেনকে তার বিনোদনমূলক গল্প এবং গানগুলি শুনিয়ে সান্ত্বনা দিতেন। সে সর্বদা মিসেস রিডের কথা এবং কর্মের অনুসরণ করে মিসেস রিড যথন ডেনকে গালমন্দ করে সেও তার সাথে সুর মেলায়। এক সময় জেনের প্রতি সে সহানুভুতি প্রদর্শন করতে থাকে। জেন যখন লােউড বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে সেখানকার শিক্ষিকা নিযুক্ত হয়, তখন জানতে পারে যে, বেসি রিড পরিবারের কোচেয়ানকে বিয়ে করে সংসার যাত্রা নির্বাহ করছে।
Mr. Lloyd : মি. লয়েড পেশায় একজন চিকিৎসক এবং একজন ঔষধ বিক্রেতা, যিনি জেনকে স্কুলে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। জেনের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল এই মানুষটি । জেনকে তার মামি যখন একটি ঘরে আটকে রাখে তখন জেন রীতিমত ভয় পায় এবং মনের দিক থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তার লয়েড জেনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসল কারণ জেনে নেয় এবং তার প্রচেষ্টায় জেনকে রিড পরিবার থেকে সরিয়ে লােউড বিদ্যালয়ে ভর্তি করানাের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
Mr. Brocklehurst : তিনি একজন যাজক এবং এতিমদের লোউড স্কুলের পরিচালক এবং সে কৃপন, নীচ স্বভাবের লোক। তার মায়ের আর্থিক সহায়তায়ই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। তিনি খুবই কাঠখােট্টা এবং রুক্ষ স্বভাবের মানুষ। নিজে যথেষ্ট বিলাস বহুল জীবন যাপন করলেও বিদ্যালয়ের এতিম বালিকাদের প্রতি তিনি ছিলেন খুবই কঠোর।বিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্য অতিরিক্ত কিছু করা হােক এটা তিনি মােটেই চাইতেন না। তিনি মেয়েদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে রীতিমতাে কৃপণতা করতেন। মেয়েদের ঠিক মতাে পােষাক-আশাকও সরবরাহ করতেন না। যার কারণে বিদ্যালয়ের মেয়েরা প্রায়ই অর্ধহারে থাকত। নিম্ন মানের খাবার খেত, গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পেত। এ রকম উদাসীনতার কারণেই লােউড বিদ্যালয়ের সিংহভাগ মেয়ে টাইফাস রােগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এক কথায় বলা যায়, তিনি এ উপন্যাসে একজন জঘন্য প্রকৃতির মানুষ হিসেবে চিহ্নিত।
Miss Maria Temple : লােউড বিদ্যালয়ের সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি জেন এর প্রতি যত্নশীল ছিলেন।মি. ব্রুকলহার্স্টের নির্দেশ মত তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। তিনি খুবই সহানুভূতিশীল এবং দয়ালু মহিলা। মি. ব্রুকলহার্স্টের নির্দেশ অমান্য করে তিনি মেয়েদের জন্য পানির আর পাউরুটির ব্যবস্থা করেন। মি. ব্রুল হার্স্ট তাকে সর্বদা নির্দেশ দিতেন মেয়েদেরকে নিজের সন্তার তুল্য জ্ঞানে তাদের পাশে পাশে থাকতেন, এতিম বালিকাদের প্রতি তার সহানুভুতির কোনাে কমতি ছিল না।
Miss Scatcherd : লােউড বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, খুবই কড়া মেজাজের মহিলা। এবং তিনি লোউড স্কুলের ইতিহাস ও গ্রামারের শিক্ষিকা। সে শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দয় ছিলেন। মেয়েরা কোনাে ভুল ভ্রান্তি করলে তিনি তাদেরকে কঠোর সাজা প্রদান করতেন সর্বদাই।
Miss Helen Burns : লােউড বিদ্যালয়ের অত্যান্ত সৎ ও ধর্মভীরু এতিম বালিকা। হেলেন বার্নস লোউড স্কুলে জেনের খুব কাছের বন্ধু। তার কোনাে বান্ধবী নেই, সে একা একাই সময় কাটায়। তার শিক্ষিকা মিস স্কেচার্ড তাকে মাঝে মধ্যে শাস্তি প্রদান করলেও বিদ্যালয় এবং শিক্ষিকাদের প্রতি সে সর্বদা শ্রদ্ধার মনােভাব পােষণ করে। তাকে শাস্তি প্রদান করলে সে শিক্ষিকার প্রতি বিরুপ না হয়ে ভাবে, তার নিজেরই হয়ত কোনাে ভুল আছে। শান্ত স্বভাবের এই মেয়েটি কঠিন যক্ষ্মা রােগে আক্রান্ত। জেনের সাথে এক সময় তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই যক্ষ্মা রােগের কারণেই সে মারা যায়।
Miss Miller : লোউড স্কুলের একজন শিক্ষিকা।
Miss Smith : লোউড স্কুলের একজন শিক্ষিকা।
Mrs. Alice Fairfax : মি. রচেষ্টারের বাসাবাড়ি থর্নফিল্ড হলের সে গৃহকর্মী [হাউজকিপার] এবং তিনি দয়াশীল ছিলেন। মিসেস ফেয়ারফ্যাক্সের দেয়া বিজ্ঞপ্তি পাঠ করেই জেন থর্নফিল্ড হলে গৃহ শিক্ষিকা পদের জন্য আবেদন করে। মিসেস ফেয়ারফ্যাক্স রচেষ্টারের পালিতা কন্যা এডলার গৃহশিক্ষিকা হিসেবে জেনকে নিয়ােগ দান করেন। লােউড বিদ্যালয়ের সুপারিনটেনডেন্ট মিস টেম্পলের পরেই ইনি হলেন দ্বিতীয় মহিলা যিনি জেন আয়ারের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতি প্রদর্শন করেন। জেন যখন রচেস্টারকে বিয়ে কারার জন্য মানসিকভাবে প্রস্ততি গ্রহণ করে তখন মিসেস ফেয়ারফ্যাক্স তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন, তিনি জেনকে বুঝাতে চান যে রচেষ্টারের বিলাস বহুল জীবন যাত্রার সাথে জেন হয়ত তাল মেলাতে পারবে না। মােটকথা, থর্নফিল্ড হলে জেনের একমাত্র সুহৃদ ছিলেন মিসেস ফেয়ারফ্যাক্স।
Adele Varens : থর্নফিল্ডে জেনের ছাত্রী এডেল। রচেস্টার তাকে দত্তক নিয়েছিল। এডেলের মা ছিলেন একজন অপেরা নর্তকী। এডেলের মায়ের নাম সেলিনি ভেরেনস। সেলিনি ভেরেসসের সাথে মি. রচেষ্টারের ভালােবাসার সম্পর্ক ছিল। একসময় এই নর্তকী অন্য এক যুবকের দিকে ঝুকে পড়ে। এতে রচেস্টার মর্মাহত হয়ে সেলিনি ভেরেনস এর নিকট থেকে দরে সরে যান। সােলিনি যুবকের সাথে মেলামেশার ফলে অন্তঃস্বতা হয়ে পড়ে এবং এডেলের জন্ম হয়। পিতৃ পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় সেই যুবক। শেষে এডেলকে রচেস্টার নিজের কাছে নিয়ে আসেন লালন-পালন করার জন্য।
Celine Varens : Celine এডেলের আসল মা। এবং রচেস্টারের প্রাক্তন প্রেমিকা ।
Bertha Rochester : মি. রচেস্টারের উন্মাদ স্ত্রী। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মাদেরিয়ায় তার জন্ম। রচেস্টারের পিতা সম্পদের লােভে এই মহিলার সাথে রচেষ্টারের বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ করেন। বিয়ের পর কিছুদিন ভালােভাবে জীবন যাপন করে। তারা পরে রচেষ্টার জানতে পারেন তার স্ত্রী হিংসুটে এবং মুখরা স্বভাবের। পরবর্তী পর্যায়ে এই মহিলা উন্মাদ হয়ে যায়। তাকে থর্নফিল্ডের একটা কক্ষে লােকচক্ষুর অন্তরালে আটকে রাখা হয়। আটক থাকা অবস্থায় সে নানা রকম ভয়াল কীর্তিকলাপ চালাতে থাকে, রচেষ্টারের প্রাণ নাশের ও চেষ্টা চালায়। থর্নফিল্ড হলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে সে। নিজেও তিন তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যায়।
Grace Poole : থর্নফিল্ড হলের মহিলা পরিজব্রিকা। তিনি থর্নফিল্ডে Bertha Mason এর রক্ষক ছিলেন এবং Bertha কে দেখাশোনা করতেন। কিন্তু সে তার দায়িত্ব কর্মে একেবারেই অমনােযােগীতার পরিচয় প্রদান করেছে সর্বদা।
Richard Mason : ওয়েষ্ট ইন্ডিজের একজন ব্যবসায়ী এবং বার্থা রয়েষ্টারের ভাই। সে থর্নফিল্ড হলে বেড়াতে এসে তার বােন বার্থার আক্রমণের মুখােমুখি হয়। বার্থা তাকে কামড়ে আহত করে। রচেষ্টার ও জেন এর মধ্যকার বিবাহে সেই একমাত্র বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। গির্জায় বিয়ের চূড়ান্ত লগ্নে একজন আইনজীবিকে নিয়ে সে হাজির হয় এবং রচেস্টার যে তার বােনের স্বামী এবং তার বােন যে জীবিত আছে এটা বলে বিবাহ কর্মে বাধা প্রদান করে।
Blanche Ingram : থর্নফিল্ড অঞ্চলের ধনী গৃহের এক ধনপতির কন্যা, দেখতে সে খুবই সুন্দরী। রুপ থাকলেও গুণ বলতে কিছু নেই বললেই চলে। সে একজন সুন্দরী মহিলা, যিনি রচেস্টারকে তার টাকার জন্য বিয়ে করতে চান। সে বরাবরই রচেস্টারকে প্রভাবিত করতে চেয়েছে। জেনের সাথে দেখা হওয়ার পূর্বে রচেস্টার তার অনুরাগী ছিল হয়ত। থর্নফিল্ড হলের প্রায় সবাই জানত যে, মিস ইনগ্রামের সাথে আওতা হতে ক্রমে সরে আসে।
St. John Rivers : খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারে নিবেদিত প্রাণ একজন মানুষ এবং তিনি মরটনের পাদ্রী। Diana ও Mary এর ভাই। জন রিভার্স জেনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। জেন যখন ক্ষুধা তৃষ্ণায় ম্রিয়মান হয়ে তার ঘরের দরােজায় পড়ে ছিল, তখন জন তাকে তুলে নিয়ে প্রাণ বাঁচায়। ধর্ম প্রচারের কাজে বিশ্বের যে কোনাে স্থানে যাওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্থত। এই সেন্ট জন এক সময় জেনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে, বিয়ের প্রস্তাব দেয় জেনের কাছে কিন্তু এ ব্যাপারে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। এরপরেও সেন্ট জন নানা ভাবে তাকে বিয়ে করার জন্য জেনকে চাপ দিতে থাকে। ধর্মের মাঝে নিজেকে পুরােপুরি সমর্পন করলেও সাধারণ জীবনযাত্রাকে সে উপেক্ষা করতে পারেনি, উপেক্ষা করতে পারেনি সংসার জীবন ও নারীর ভালােবাসার বন্ধনকেও।
Diana Rivers : জন রিভার্স এর বোন। জেনের কাজিন।
Mary Rivers : জন রিভার্স এর বোন। জেনের কাজিন।
John Eyre : ওয়েষ্ট ইন্ডিজে বসবাসকারী একজন ধনী ব্যবসায়ী। জেন আয়ারে চাচা। তিনি মৃত্যুর পূর্বে তার সব সম্পদ জেন আয়ারের নামে উইল করে যান।
রােজমন্ড অলিভার : মি. অলিভার রােজমন্ড নামক একজন ধনী ব্যাক্তির কন্যা। সে সেন্ট জনকে ভালােবাসে এবং তাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চায়, কিন্তু সেন্ট জন রােজমন্ড অলিভরকে মােটেই পছন্দ করে না। সেন্ট জন পছন্দ করে জেনকে এবং জেনকে সাথে নিয়ে সে ভারতে ধর্ম প্রচার করতে যেতে চায়।
সামারি বা আর্টিকেলটি পড়ে কেমন লাগলো, তা কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই জানাতে পারেন। এতে করে আমি উতসাহ পাবো।
6 Comments
ভালো উপস্থাপনা।
ReplyDeleteধন্যবাদ
DeleteNice summary
ReplyDeleteDefinitely helpful. I could easily point out the characters and the main themes of the novel Jane Eyre. I can not thanks enough for getting that much benefits from here.
ReplyDeleteValo hoise
ReplyDeleteVery helpful Brother. Allah bless you.
ReplyDelete